ছাতিরচর বেরিবাঁধ: এক স্বপ্নপূরণের গল্প

ছবিটা শুধু প্রকৃতির নয়, এটি একটি অধ্যায়ের সাক্ষী—যেখানে একটি ইউনিয়ন, একটি জনপদ এবং হাজারো মানুষের দীর্ঘপ্রতীক্ষিত স্বপ্ন মিশে আছে। বলছিলাম কিশোরগঞ্জ জেলার নিকলী উপজেলার ছাতিরচর ইউনিয়নের সদ্য নির্মিত নদী রক্ষা বাঁধের কথা।

যুগের পর যুগ ধরে ঘোড়াউত্রা নদীর নির্মম ভাঙনে ছাতিরচরের বিস্তীর্ণ এলাকা ধ্বংসের মুখে পড়েছিল। প্রায় ৮০ বছর ধরে নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে গ্রামটির প্রায় ৭০ শতাংশ জমি। অসংখ্য মানুষ হারিয়েছেন ঘরবাড়ি, ভিটেমাটি। অনেকেই জীবন ও জীবিকার আশায় চলে যান দূরের শহরে—ঢাকা, চট্টগ্রাম কিংবা কাছাকাছি এলাকাগুলোতে।কিন্তু হার মানেনি ছাতিরচর।নদীভাঙনের সেই ভয়াবহতা ঠেকাতে অবশেষে নেয়া হয় বাস্তবভিত্তিক পদক্ষেপ। পানি উন্নয়ন বোর্ডের তত্ত্বাবধানে প্রায় ৫২ কোটি ১৫ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা হয় ১,৪০০ মিটার দীর্ঘ প্রতিরক্ষা বাঁধ। এই প্রকল্পে ব্যবহার হয়েছে ৩ লাখ ৫৮ হাজার ৯০০টি ব্লক, ১ লাখ ১১ হাজার ২৬৮টি বালির বস্তা, এবং ৬২ হাজার ৭৪৭টি জিও ব্যাগ।

স্থানীয় জনগণ, জনপ্রতিনিধি ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় বাস্তবায়িত হয়েছে এই আশাজাগানিয়া প্রকল্পটি।
এখন ছাতিরচরের মানুষ বুকভরে নিশ্বাস নেয়—কারণ তারা জানে, তাদের মাটি এখন অনেকটা নিরাপদ।

এ বাঁধ শুধু একটা নির্মাণ প্রকল্প নয়—এটি এক সংগ্রাম, এক অপেক্ষা, আর এক বিজয়ের প্রতীক।
ছাতিরচরের মানুষ আজ মাথা উঁচু করে বলতে পারে—”আমরা পারি। আমরা জিতেছি।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *